হৃদরোগ

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - গার্হস্থ্য বিজ্ঞান - নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা | | NCTB BOOK

আমাদের দেশে দিন দিনই হৃদরোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হৃদরোগের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে – অনিয়ন্ত্রিত জীবন - সম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় খাদ্য গ্রহণ, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাদ্যশক্তি গ্রহণ, ব্যায়াম বা শারীরিক যাপন, অতিরিক্ত পরিশ্রম না করা, বংশগত কারণ, বিপাকীয় ত্রুটি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য । হৃদরোগে আক্রান্ত হলে অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে

 

নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং এ সংক্রান্ত বিধি নিষেধগুলো মেনে চলতে হবে

নিয়মিত ও প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করা

নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ ও ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা

নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করা

নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠা।

৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানো

মানসিক চাপ, উত্তেজনা ও রাগ নিয়ন্ত্রণ করা

ধূমপান ও মদপান পরিহার করা

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করা

প্রতিদিন জীবনযাত্রায় যথাসম্ভব নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলা

শারীরিক যে কোনো জরুরি অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা

 

হৃদরোগে খাদ্য ব্যবস্থাপনা -

হৃদরোগীর খাদ্য এমন হতে হবে যাতে করে রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য শক্তির চেয়ে বেশি খাদ্য শক্তি গৃহীত

না হয় ও খাদ্য সুষম হয়। খাদ্যের মাধ্যমে চিনি, লবণ ও ফ্যাটের গ্রহণ যেন কম থাকে এবং প্রচুর পরিমাণে আঁশ-জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়াও নিচের বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে।

  • লাল চালের ভাত ও ভুষিসহ আটার রুটি খাওয়ায় অভ্যস্ত হতে হবে এবং চাল ও আটার তৈরি খাবার
  • প্রয়োজনীয় পরিমাণের চেয়ে বেশি খাওয়া যাবে না।
  • বেশি আঁশযুক্ত খাদ্য যেমন- শাকসবজি ও ফল বিশেষ করে টক জাতীয় ফল যেমন- লেবু, জাম্বুরা,
  • কমলা, আনারস ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
  • বিভিন্ন রঙিন সবজি যেমন- সবুজ (শাক পাতা), কমলা (মিষ্টি কুমড়া / গাজর), বেগুনি (বিট), লাল (টমেটো), হালকা হলুদ-সাদা (মুলা, শসা) প্রতিদিন গ্রহণ করতে হবে। মৌসুমি তাজা শাকসবজি প্রতিদিন খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
  • ডাল, বাদাম পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।
  • মাছ, চর্বি ছাড়া মাংস, চামড়া ছাড়া মুরগির মাংস, ডিম প্রয়োজনীয় পরিমাণে খেতে হবে।
  • ননী তোলা দুধ ও এই দুধের তৈরি টক দই খাওয়া ভালো।
  • রান্নায় লবণ কম দিতে হবে এবং খাওয়ার সময় বাড়তি লবণ খাওয়া যাবে না ।

 

যে খাবারগুলো বাদ দেওয়া উচিত

 

  • মাখন, ঘি, ডালডা, ক্রিম সস, নারকেল, বেশি তৈলাক্ত ও চর্বিযুক্ত খাদ্য।
  • আইসক্রিম, মিষ্টি-জাতীয় খাদ্য ইত্যাদি।
  • বেশি চর্বিযুক্ত মাংস, কলিজা, হাঁস-মুরগির চামড়া ও এদের তৈরি খাদ্য ।
  • বেশি লবণযুক্ত বা লবণে সংরক্ষিত যে কোনো খাবার, যেমন- পনির, আচার-চাটনি, , সয়া সস ,চিপস্, চানাচুর, লবণযুক্ত বাদাম, নোনা ইলিশ, টিনজাত মাছ ইত্যাদি।
  •  ফাস্টফুড যেমন- চিকেন ফ্রাই, পিজ্জা, মাংসের তৈরি নাগেট ইত্যাদি।
  • বেকারির খাবার যেমন- বিস্কুট, পেস্ট্রি, কেক ইত্যাদি ।
  • সফট্ ড্রিংকস ও এনার্জি ড্রিংকস, ডার্ক কফি ইত্যাদি।
  • সালাদে লবণ ও সালাদ ড্রেসিং বাদ দিতে হবে।
  • চাইনিজ লবণ বা টেস্টিং সল্ট বাদ দিতে হবে।

কাজ — হৃদরোগীর জন্য নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন করার সময় খাদ্য সংক্রান্ত কোন কোন বিষয়গুলোর - দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে?— একটি চার্টের মাধ্যমে দেখাও ৷

Content added By
Promotion